রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০১৫

গতকালকের ভূমিকম্প থেকে আমরা যা শিখলাম

গতকালকের ভূমিকম্প থেকে আমরা যা শিখলাম।
.
১. প্রথমত বুঝাগেলো ভূমিকম্প একটি চরম আনন্দদায়ক ব্যাপার। মানুষ কোন কিছুতে আনন্দ পাইলে ‘হালের ক্রেজ’ ট্রিট চায়। হয়তো কয়দিন পরে এমনো দেখার লাগতে পারে একজন আরেক জনেরে কইতাছে “মাম্মাআআআআ আর্থকোয়াকে তোর বাড়ি বেশি শেইক করছে। সেলিব্রেট করুম, ট্রিট দে!!”
.
২. দ্বিতীয়ত জীবনের চেয়ে সেলফির মূল্য অনেক বেশি। শেল্টার খুজার আগের একটা 'শেকফি' না তুল্লে জীবন বৃথা প্রয়োজনে এর চেয়ে পিলারের চাপা খাইয়া মইরা যাওয়া ভালো!!
.
৩. দুনিয়ার সবাই টাকার জন্য স্বর্থপর হইলেও বাঙ্গালী এক্ষেত্রে উদার। ফার্স্টেট ওয়েদার ফরকাস্টের জন্য কোন টাকা পাবেনা জেনেও ভূমিকম্পের প্রথম দুই সেকেন্ডে উসাইন বোল্টের গতিতে “ভূমিকম্প হচ্ছে” স্ট্যাটাস দিয়ে এর পরে শেল্টার খুঁজবে। কন কত্ত বড় উদার দিল হইলে ভূমিকম্পের সময় মাইনষে এই কাম করতে পারে squint emoticon
.
৪. ভূমিকম্পের শেষে সুঁইয়ের মত সোজা ২০ তলা বিল্ডিংটাও কিছু মানুষের কাছে ৪৫ ডিগ্রী ত্যাড়া মনেহবে। দেয়ালে রঙ উইঠা যাওয়া কোন অংশরে ফাটল মনেহবে এবং তারা তা অন্য জনকে দেখাবে, ভাইরাস আকারে অন্যদের মাঝেও এটা ছড়াতে থাকবে।
২-৪ জন ফোন করে তেতুলিয়া-টেকনাফের আত্মিয়কে জানাবে যে ‘ঢাকায় যেইইইইইইইইইই একটা ভূমিকম্প হইছে নাআআআআ আমার সামনের ২০ তলা বিল্ডিং ফাইটা পুরা কাইত হইয়া গেছে” এবং কিছুক্ষনের মধ্যে অনলাইন পত্রিকায় আসবে “ভূমিকম্পে গুলশানে বিল্ডিং ধস (লাইভ ভিডিও সহ)” colonthree emoticon
.
৫. ভূমিকম্প পরবর্তি পাব্লিক এটেনশন পাইতে ৪০ বছর আগে উগান্ডার ভূমিকম্পে কোন গ্রামের ধ্বংসলিলার ছবি গুগল থেকে নামায়া তা রংপুরের ছবি বইলা আপডেট দিতে হবে।
.
৬. কিছু পাব্লিককে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এরিয়া থেকে হাজার মেইল দূরে থেকেও “সেইফ” চেকিন দিয়ে লিস্টের ফ্রেন্ডদের টাইম লাইন নোটিফিকেশনে ফাটায়া ফেলবে। সাথে হুযুগে বাঙ্গালীর এই বলদামির কারনে ঐ এপের স্টাটেস্টিক্স হিসাব আউলা ঝাউলা কইরা মূল টার্গেটেরই মা বেহেন কইরা দিবে।
.
৭. আগের দিন ভূমিকম্প শেষে পরের দিন অফিসে যাওয়ার সময় বাসে হকারের মুখে শুনতে পাবেন “তিন দেশে ভূমিকম্প, মাত্র তিন টাকা!!!” confused emoticon
.
৮. কিছু পাব্লিক ফেবুকে হ্যাস ট্যাগের মাধ্যমে উদ্ধার কাজে নামবে!!
.
৯. আর সবচেয়ে বড় জিনিস যেটা বুঝলাম, আমরা চরম সাহসী। এমন কি যে আমাদের বানাইছে সেই উপরয়ালাও আমগো সামনে কিছুই না!! (নাউযুবিল্লাহ, তয় আমগো ভাব সাবে তাই কয়)
.
কালবৈশাখী ঝড় বা ঘুর্নিঝড়ে আমগো মনে কবিতা আসে, খিচুড়ি ইলিশ খাইতে মনেচায়। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই “এই ঝিরি বৃষ্টি, তোমার আমার প্রেমের সৃষ্টি” বা “বারিশ কো আনে দো, দেখলুজ্ঞা”!!
শুধু ভূমিকম্পেরই একটা ভয় আগে যাও মাইনষের মধ্যে দেখতাম এখন মনেহয় এই “ইউ নো হোয়াট” জানামায় ওইটাও আমারা ওভারকাম কইরা ফেলছি।
.
সাড়ে সাত স্কেলে ঝাঁকি দিয়াও আল্লাহ আমাদের মন ঝাঁকাইতে পারে নাই!!! (নো অফেন্স, ইঙ্কলুড মি ওলসো)।
খুব কম মানুষই মনেহয় ঝাঁকি খাইয়া বাইচ্চা যাওয়ার পরে শোকর আদায় কইরা দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ছে।
.
দোয়া কইরেন আল্লাহ যাতে আপনেরে আমারে ফাইনাল ‘ঝাঁকি’ খাওয়ার আগেই যেন নিজেরে ‘ঝালাই’ কইরা নেয়ার তৌফিক দেয়। নাইলে মরার পরে অনন্তকাল কবরে ফেরেস্তাগো ‘ঝাঁকাঝাঁকি’ ট্রিট এন্ড শেকফি বিহীন ‘সেলিব্রেট’ করন লাগবো। squint emoticon

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন