“ইউনিকে” আসার পর থেকে মনে হচ্ছে আমি আবার স্কুলে
ভর্তি হইছি!! স্কুলে যেমন সবার False নাম থাকতো এইখানেও তেমন। বেশির ভাগেরই False
নাম আছে! এইখানে আসছি প্রায় তিন চার মাসের মত কিন্তু এখনো অনেকের আসল নাম আমি জানি না!!
False নামেই ডাকি!! যেমনঃ কুসুম, হাসসসসু, কমান্ডার।
“কুসুম” কোন মেয়ের নাম না। এইটা একজন ছেলের নাম।
অফিসের বেশিরভাগ ডিমের কুসুম নাকি তার পেটে যায় তাই তার নাম “কুসুম”!!!
“হাসসসু” ভাইয়ের হাসি মোনালিসার হাসির চেয়েও
রহস্যময়। তিনি হাসলে বুঝার উপায় নাই উনি হাসতেছেন না কাঁদছেন নাকি কোন কারনে
ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে এই চেহারা করে রেখেছেন!!
আর “কমান্ডার” ভাইয়ের মাথার চুলের কাট থেকে শুরু
করে কথাবার্তা চলাফেরা সব আর্মি কমান্ডার স্টাইলে। এমন কি উনি কাঁধে যেই ব্যাগ
নিয়ে আসেন ওইটা দেখতে মনেহবে প্যারাসুটের ব্যাগ। একটু পর জাম্প করবেন। তাই উনি “কমান্ডার”
নামেই পরিচিত।
আরো কিছু নাম আছে। যেমন সুমনের নাম “আজব”!!!
কিন্তু কি কারনে “আজব” তা অবশ্য আমি জানি না। “ইমানুর” ভাইয়ের নাম “এমা” বা “এমা
ওয়াটসন..!!” “সজীব চৌধুরীর” নাম “সজীব বৌধুরী”..!! “জসিম” ভাই একবার নিজের নাম ভুল
করে “জসিমের” জায়গায় “জেসমিন” লিখেছিল। ব্যাস, এর পর থেকে ওনার নাম “মিস.
জেসমিন”....!! আমরা তাকে এখন “জেসমিন আপা” বলেই ডাকি..!! “সাকিব ভূইয়া” ভাইয়ের নাম
“সাকিব ভাও..!!” “সাবাব” ভাইয়ের নামটা সুন্দর। “সাবাশ”!!
“কামরুল” ভাইয়ের নাম “কাহা।” কিছুদিন হল নতুন
আরেক জন কামরুল আসছেন। So এখন একজন “বড় কাহা” আরেক জন “ছোড কাহা”...!!
“রুবেল” আছে দুইটা। দুইজনের নাম একি হলে তারা
নাকি মিতা। আর আমরা একজনকে ডাকি “মিতা..!!” আরেকজনকে “মিতু..!!” বলে। রুবেল নাম
গায়েব :P
(সাস্থ্যমন্ত্রী নামে একজনের নতুন নামকরন করা
হইছে কিন্তু সে কে তা আমি বলছি না। তাহলে আমার “ইউনিক” থেকে uninstall হইয়া
যাবার চান্স আছে :P)
তয় এইসব নামকরনের উদ্যোগক্তা হচ্ছেন আমাদের
রোজারিও স্যার। উনি একটা
নাম কইয়া দেন আর পোলাপাইন ওইডাই fixed কইরা ফালায়। (উনার
ইনসাফ আছে। সবার ক্ষেত্রেই সমান। নিজের মেয়ে বিথিকে তিথি বলেন, আর তিথিকে বিথি
বলেন!!)
আমার ক্ষেত্রে অবশ্য একটু ভিন্ন ব্যাপার। সবার
একটা False নাম থাকলেও আমার এখন পর্যন্ত ৫টা হইছে...!!
আমাদের ম্যানেজার মেম আমাকে ডাকেন “ছুজান” বলে। বিদেশী
মানুষ, তাই হয়তো তিনি বাংলায় “সুসান” ডাকতে পারেন না। কিন্তু আরেক মেম আছেন উনি
বাঙ্গালী কিন্তু উনি দেখি আমাকে ডাকেন “ছুছান” বলে!! “নাভিদ” স্যার আরো সোয়া
ডিগ্রি আগানো। তিনি ডাকেন “ছুজ্যেয়েন” বলে!!! সবাই যখন এতো নামে ডাকে তো নামকরনের
উদ্যোগক্তা “রোজারীও” স্যারো বা বইসা থাকবে ক্যান। উনি আমাকে ডাকেন “শ্মশান”
বলে!!!
এগো সবার পাল্লায় পইড়া আমার বাল্যবন্ধু “রুবেল”ও
দেখি আমাকে “ছুজান” বইলা ডাকে। কয় তোর নামের স্পেলিংয়ে সমস্যা আছে। এইটা “ছুজান”
হবে। (আমি কই, হালা নয়া শিক্ষিত হইছো, ২৫ বছর ধইরা “সুসান” কইয়া ডাকো তখন স্পেলিং
ভুল দেখো নাই।)
তো “ছুজান”/“ছুছান”/“ছুজ্যেয়েন”/ “শ্মশান”/
“সুসান” যে যেই নামেই ডাকুক আমি বুঝি যে আমাকেই ডাকছে কারন এগুলো সবগুলোর সাথেই
সিমিলারিটি আছে।
....
....
সম্ভবত গতমাসে কোন একদিন আমি আর রুবেল লবিতে
দাঁড়িয়ে কথা বলছি। পিছনে “কুসুম” ভাই দরজায় দাঁড়িয়ে “শুবাস ভাই.... ওও শুবাস
ভাই..ওই শুবাস ভাই” বলে চিৎকার করে কাকে যেন ডাকছে।
কতক্ষন পর আমাকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মেরে বলে
“কি হইলো শুবাস ভাই, বয়রা হইয়া গেছেন নি? এতো জোরে চিল্লাইয়া ডাকতাছি, শুনেন না
যে..!!”
আরে মোর জ্বালা, আমি আবার কবে “সুসান” থে “শুবাস”
হইলাম!!
www.facebook.com/sm.susan
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন