ইন্টার
ফার্স্ট ইয়ারের কথা। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজে পড়তাম। আর্মি দের কলেজ। তাই প্রথম
প্রথম একটু ভয়ে ভয়ে থাকতাম। পড়া পারি আর
না পারি সব সময় ডিসিপ্লিন ঠিক ভাবে মানতাম। ব্যাগ ভর্তি করে সব ক্লাসের বই খাতা
নিয়ে আসতাম। পুরা কিন্টারগার্ডেনের পোলাপাইনের মত।
তো
এক-দেড় মাস পরে কইলজায় একটু একটু পানি আসছে। অনেক বার স্কুল পালাইছি কিন্তু এখনো
কলেজ পালানো হয়নি। কলেজ না পালাইতে পারলে কলেজে পড়ার কোন মানেই হয় না...!! :P
আদমজী
কলেজের চার পাশেই মোটামুটি উঁচা করে কাটা তারের বেড়া দেয়া। আর গার্ড তো আছেই। খুজতে
খুজতে একদিন একটা পালানোর পথ পেলাম। আমাদের ক্যান্টিনের পিছনেই আদমজী স্কুলের
পিছনের গেইট। ওই গেইট দিয়ে কিছু দূর গেলেই একটা কংক্রিটের বাউন্ডারী দেয়াল। ওইটা
পার হতে পারলেই কাম সারা। শুধু কেউ না দেখলেই হয়।
তো
একদিন কয়েক ফ্রেন্ড মিলে কলেজ পালানোর প্ল্যান করেছি। ওইটাই প্রথম কলেজ পালানো।
প্ল্যান মত স্কুলের গেইট দিয়ে ঢুকে বাউন্ডারী পর্যন্ত গেলাম। কিন্তু দেখলাম
বাউন্ডারীটা একটু উঁচা, আর কাধে ভারী ব্যাগ নিয়ে ওই দেয়াল পার হওয়াটাও মুশকিল।
বাউন্ডারির ওপারে তৎকালীন প্রধান্মন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাড়ির রাস্তা। সুতারাং ওই রাস্তার
সিকিউরিটি অনেক। তাই সবাই কে বললাম, “এককাজ কর, ব্যাগ আগে দেয়ালের ওপাশে ফেলে দেই।
ওখান থেকে কেউ নিবে না। এর পর দেয়াল পার হই। তাহলে সুবিধা হবে”
সবাই
তাই করলো। এর পর দৌড়ে এসে এক লাফে দেয়ালের উপর উঠলাম। দেয়ালের উপর উঠেই তো আমার
মাথায় হাত।
দেয়ালের
ওই পাশে যে ইয়ায়ায়ায়া বড় এক ড্রেন আছে তা তো জানতাম না.....!! সুতারাং যা হবার তাই
হইছে। ব্যাগ যা এপার থেকে ওপারে ফেলছিলাম তার বেশির ভাগই এই ড্রেনে পরছে।
আর ডানে
বামে দেয়ালের উপর বসে থাকা আমার ফ্রেন্ডরা আমার দিকে দাত কামড়িয়ে যেভাবে তাকিয়ে
ছিল মনেহয় আজকে আমাকে এই ড্রেনেই কবর দিবে। যেহেতু গোবর ভরা বুদ্ধিটা আমার মাথা
থেকেই বের হইছিল :/
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন