রবিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

আগে-এখন...

১) আগে মাইনষে আলু ভাজি খাইতো এখন মাইনষে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খায়।
২) আগে মাইনষে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিত এখন মাইনষে বন্ধুদের সাথে হ্যাং আউট করে।
৩) আগে মাইনষে গরম গরম চা কফি খাইতো ঠান্ডা হইয়া গেলে আবার ওর্ডার দিত, এখন মাইনষে ডাবল দাম দিয়া ঠান্ডা চা কফি আই মিন কোল্ড টি/ কফি খায়।
.
৪) আগে পোলাপাইন গুলতি দিয়া পাখি শিকার করে মজা পাইতো এখন পোলাপাইন এংরি বার্ডস খেলে পয়েন্ট কামায়া মজা পায়।
৫) আগে বিবাহিত মেয়েদের হাজবেন্ড থাকতো এখন হাব্বি থাকে।
৬) আগে বড় বোন কে আপু বলতো, এখন বড় বোনকে “আপ্পি” বলে।
.
৭) আগে বড় ভাই কে “ভাইয়া” বলতো এখন বড় ভাই কে “ব্রো” বলে(আই রিপিট “ব্রো” বলতো, নট “ব্রা”)
৮) আগে মানুষ প্রেম করতো এখন মানুষ ‘রিল্যাশন’ করে।
৯) আগে প্রেমিক/ প্রেমিকা থাকতো, এখন বিএফ-জিএফ থাকে।
.
১০) আগে মানূষের ছাড়াছাড়ি হইত (তাও রেয়ার) এখন মাইনষের ব্রেকাপ হয় (না হওয়াটাই রেয়ার)
১১) আগে যাদের বহনযোগ্য কম্পিউটার থাকতো তাকে তাঁরা ল্যাপটপ বলতো এখন একে মাইনষে ল্যাপি বলে।
১২) আগে যে জিপিএ ফাইভ পেতো সবাই তাকে দেখতে আসতো এইডা মানুষ না অন্য কিছু, এখন যে ফেল করে তারে সবাই দেখতে আসে এইডা মানুষ না অন্য কিছু তা বুঝার জন্য।
.
১৩) আগে মানুষ বাহির থেকে আসলে মুখ হাত ধুইতো , এখন মানুষ ফ্রেস হয়।
১৪) আগে মানুশ বাথরুমে যাইতো এখন মানূষ ওয়াশরুমে যায়।
১৫) আগে মানুষ আশ্চার্য হলে “ ইয়া আল্লাহ” বা “ওহ মাই গড” বলতো, এখন এমন কিছু হইলে মানুষ “ও এম জি” বলে।
.
১৬) আগে ভাইয়া সমাজ কইয়া বইলা চাইয়া যৌতুক নিত, এখন ভাইয়া সমাজ “মেয়েকে সাজায়া” দিতে বলে 
১৭) আগে হেজাব-বোরগা পড়ত পর্দা করার জন্য এখন বেশিরভাগ হেজাব-বোরগা পড়ে ফ্যাশনের অংশ হিসাবে!!
১৮)আগে মানুষ ছবি তুলতো, এখন মানুষ ফটোগ্রাফি করে 
.
১৯) আগে পোলাপাইন গিটার বাজিয়ে আর গান গেয়ে প্রেমিকা পটানর ট্রাই করত, এখন ডিএসেলারে ছবি তুলে আর বাইকে চড়িয়ে প্রেমিকা পটানর ট্রাই করে।
২০) আগে মানুষের মেজাজ খারাপ হইলে “এইসব কিইইইইইই” বলে চিক্কার দিত এখন মানুষ “what the f**k” বলে চিক্কার দেয়
২১) আগে মানুষে খিদা মিটানোর জন্য খাবার নিয়ে বসতো, এখন মানুষ ছবি তুলে ফেবু তে আপলড দেবার জন্য খাবার নিয়ে বসে।
.
২২) আগে পোলাপাইন তিন গোয়েন্দা/ কমিক্স এসব বই পড়ত, এখন পোলাপাইন ফেসবুক পড়ে।
২৩) আগে মানুষ ফ্রেন্ড কে দোস্ত বলতো, এখন ফ্রেন্ডকে মামা বলে।
২৪) আগে আপু সমাজের কাউকে “হট/সেক্সি” বললে জুতার বাড়ির আওয়াজ শুনা যাইতো, এখন এই সব বললে লাজুক লাজুক মুখে “থেঙ্কস ফড় ইউড় কমপ্লিমেন্ট” নামক কৃতজ্ঞতার বানী শুনা যায়।
.
২৫) আগে মানুষ কারো চ্যালেঞ্জ জাতীয় ব্যাপারে বিরক্ত হইলে বুইড়া আঙ্গুল দেখাতো, এখন মিডেল ফিঙ্গার দেখায়।
২৬) আগে মানুষের কিছু ভালো লাগলে “কি সুন্দর” বলতো, এখন মানূষের কিছু ভালো লাগলে “শো শুইট” বলে।
২৭) আগে টিচারেরা সুসানের পরীক্ষার খাতা দেখে মেজাজ খ্রাপ করতো “হারামজাদায় এডি কি লেখাছে, বই এর সাথে কোন মিলি নাই”
এখন মানুষ সুসানের ফেসবুক স্টাটাস দেখে মেজাজ খ্রাপ করে “হারামজাদার এত্ত বড় বড় কি বস্তাপচা লেখা লেইক্ষা হোম্পেইজে ভরায়া থোয়, হুদ্দাই কেবি নস্ট”

মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

শেষ বিচার

“মাইক্রো এসডি কার্ড আছে??”
< “আছে কত জিবি লাগবে??”
“চার জিবি দেন”
< “চার জিবি তো নাই। আট আর দুই জিবি আছে। আট জিবি নেন। সাড়ে তিনশ রাখতে পারব ”
.
“আমার এইডায় সাপর্ট করে ৪জিবি আমি আট জিবি দিয়া কি করুম”
< “তাইলে দুই জিবি নেন ২২০/- রাখা যাবে”
“লাগবে না, চার জিবির দামই আড়াইশো। হুদ্দাই ৩০-৪০ টাকা ডিফারেন্সের জন্য অর্ধেক মেমরী নিয়া লাভ নাই।”
< “না না, দুই আর চার জিবিতে বেশি ডিফারেন্স নাই। বরং দুই জিবি টা টিকে বেশি+ অনেক সময় ২জিবির কেবি ৪ জিবির চেয়েও বেশি হয়, এইখানে বাস স্পিড ক্লক স্পিডের ব্যাপার আছে। অনেকে তো এইডা বুঝেই না। নাইলে কি আর মাত্র ৩০-৪০ টাকা ডিফারেন্সে ডাবল মেমরী দেয়া যায় নাকি। ২ জিবি দুইশ হইলে চার জিবি তো ৪০০ হওয়ার কথা ”
.
“আমার কপালে কি লেখা আছে দেখা যায়??”
< “না কিছু লেখা নাই তো, কিছুই তো দেখা যায় না”
“আমার তো মনেহয় আপনে ঠিকি দেখতাছেন আমার কপালে ‘আহাম্মক-বলদ-আবাল-বেকুব-ছাগল’ এমন টাইপ কিছু লেখা.... যেই জিনিস নাই তো নাই, তোরে এত উল্টাপাল্টা বুঝ দিতে কয় কেডা?? দুই জিবি তে চার জিবির চেয়ে বেশি মেমরী!! ক্লক স্পিড-বাস স্পিড আমারে চিনাস!!?? কানশা বেড়ায়া ঠাড়ায় এমন একখান বন দিমু যেই খাদের থে ঢাহা শহরে উইঠা আইছস লোক ঠকানির লাইজ্ঞা আবার ঐখাদেই যাইয়া পড়বি”
< “ভাই যেমনেই হোক বেইচ্চা টার্গেট তো পুরন করার লাগে, নাইলে মালিকে তো আবার আমারেই খেদায়া দিবো”
.
.
.
হারাম ইনকাম শুধু সরকারী চাকুরিতেই নাই, হারাম প্রাইভেট চাকুরিতেও আছে, হারাম ব্যাবসাতেও আছে।
চাকুরীর ক্ষেত্রে ‘স্যারেরা’ একে কমিশন বা সাইড ইনকাম বা এক্সট্রা ইনকাম বলে, ব্যাবসার ক্ষেত্রে একে ব্যাবসায়ীরা ‘মুরগী বানায়া লাভ’ বলে। এইসব লামছাম বুঝানি দুনিয়ার ৫০-৬০ বছর হায়াত পর্যন্তই। দুইন্নাইতে পাঠানির টার্গেট পূরন না হইলে এক বিঘাত উপরে সূর্যের তলে বইসা শেষ বিচারের দিন কইলাম এই সব বুঝায়া পার পাওন যাইবো না।
মাইন্ড ইট।

সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

মালিহার প্রেম কাহানি

“ভাইয়া তোমার পরিচিত কোন গুন্ডা আছে??”

< “এঁ  কি বাংলা ছিনেমার মত কথা কও। গুন্ডা দিয়া কাম কি??”

“একটারে মাইরাল্বাম”

< “কারে??  ”

“যারে ভালোবাসি তারে”

< “এঁ  পিচ্চি মাইয়া জমিন থে এখনো কোমড় সোজা কইরা দাঁড়াও নাই এখনই ভালো বাসা-বাসি!! ”

“ আমি পিচ্চি না ভার্সিটিতে পড়ি  ”

< “ফুল কাহিনি কও”

“আমাদের ব্যাচের এক ছেলেকে পছন্দ হইছে।”

< “আমারে কইতাছো ক্যা?? ওরে যাইয়া কও, তাইলেই তো ঝামেলা শেষ”

“আরে বলতে গেছিলাম তো। কিন্তু এর পরের কাহিনির জন্যই গুন্ডা টোগাইতাছি ঐরে মাইরালামু ”

< “পরের কাহিনি কি?”

“ওরিয়েন্টেশনের দিন ওর পাশে যাইয়া বসলাম পেটের কথাটা বলার জন্য। প্রথমে টুক টাক কথা বললাম। ও জিজ্ঞাস করলো ‘তোমরা কয় ভাই বোন’ আমি বলছি ‘আমি একাই, কোন ভাই বোন নাই’”

< “এরপর?”

“এরপর এইটা শুনে ও বলে ‘ও তাই?? আমিও একা, আমার কোন ভাই বোন নাই। অক্কে আজকে থেকে আমরা তাহলে ভাইবোন। আমার আর বোনের অভাব থাকবেনা সাথে তোমারও আর ভাইইয়ের অভাব থাকবে না!!!’
বলদের বাচ্চারে খুন করতে মনচায় না!! একটা মেয়েরে প্রথম দেখায় ভইন বানায় কেউ?? কি কইতে চাই হেইডা তো আগে শুনবি... তার আগেই কয় আমরা এখন থেকে ভাইভইন!!  ”

বুঝতাছিনা হাসির ইমো দিমু না ভ্যাবাচ্যাকার ইমো দিমু

বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

বেশি বেশি

আগে টিভি চ্যানেল ছিলো একটা বিটিভি, মাইনষের বাসায় টিভিও থাকতো একটা। আবার সবার বাসায় টিভি না থাকলেও টিভি দেখার জন্য কম বেশি সবার দরজাই সবার জন্য খোলা থাকতো। বিটিভির অধিবেশন শুরু হত ৩টায় শেষ হত সাড়ে ১২টার মধ্যে।
.
প্রতিদিন দেখার মত একটা অনুষ্ঠান হত যেটা দেখার জন্য সারা সাপ্তাহ অপেক্ষায় থাকত সবাই। অনেক সময় বার মনে না থাকলেও অনুষ্ঠান দিয়ে বার মনে করতাম। যেমন গতকাল ম্যাগাইভার ছিলো সো আজকে সোমবার, আজকে তাহলে ওসান গার্ল, তারমানে কালকে মিস্টেরিয়াস আইল্যান্ড, ক্যাপ্টেন প্লানেট, আরেকদিন টিম নাইট রাইডার (এইডার ছুডূ নাইকাডা আমার চাইল্ড হুড ক্রাশ  ) মাসে একদিন রবিবার রাত ১১টায় ছায়াছন্দ আর শুক্রুবার সাড়ে ৮টায় আলিফ লায়লা, সাড়ে ১০টায় এক্সফাইলস।
.
এইসব অনুষ্ঠানের টাইমে এলাকার মাঠে মানুষ তো দূরের কথা মশা মাছিও মনেহয় টোগায়া পাওয়া যাইতো না। আর ইত্যাদি হওয়ার দিন তো মনেহয় বাহিরে ১৪৪ ধারা!! আবাল বৃদ্ধ বনিতা যে যেইখানে যেই কাজেই থাকুক ৯টায় আগেই দৌড়ায়া বাসায় হাজির হওয়া চাই। নিজের বাসায় না হইলেও অন্য কোথাও টিভি পাইলে ঐখানে বইসা পড়তো। কেউ খাটে, কেউ সোফায়, নিচে ফ্লোরে কোন বাধ বিচার নাই। রিমোট নিয়ে কোন কাড়াকাড়ি নাই। মোবাইলে কল আসার যন্ত্রনা নাই।
আলিফ লায়লা বা ইত্যাদি শুরুর সময় পুরা এলাকায় সবার বাসা থেকে একি মিউজিক বের হত, সে এক অন্য রকম ফিলিংস।
.
তখন কারেন্টো যাইতো রাতে একবার। সেটাও এক প্রকার এন্টারটেইন্মেন্ট। তখন আইপিএস বা এলিডি বাত্তি বা চার্জার ফ্যান এভেলেভেল ছিলো না। কারেন্ট গেলে সবাই হোওওওওওওও করে উল্লাস প্রকাশ করতো এন্ড নগদ খালি গায়ে বা সেন্ডো গেঞ্জি পরে বাহিরে বাহির হওয়া চাই। শুরু হত এলাকার মাঠে পোলাপাইনের ছুটাছুটি, মধ্যবয়সী আন্টিদের আড্ডা, বাদাম খাওয়া, রাস্তায় আরো বয়স্ক ডায়বেডিক্স চাচা চাচীদের উসাইন বোল্টের স্পিডে হাটিহাটি।
.
বেশির ভাগ বাসায় সবার জন্য কাপড় চোপড় কিনা হত বছরে একবার বা দুবার। শুধু ঈদের সময়। ঈদের আগে আবার কাউকে ঈদের ড্রেস দেখানো যাবে না এমন রিতিও ছিলো। ঈদে নতুন ড্রেস পরা আর সবাইকে দেখানোর মাঝে আলাদা মজা ছিলো। ওটা পরেই সব আত্মীয়র বাসায় যাওয়া, বিয়ে, জন্মদিন সব অনুষ্ঠান পার হতো। তাও মনেহয় পুরান হতো না সেটা স্পেশাল ড্রেসই থাকতো।
.
.
.
এখন টিভির অধিবেশন শুরুও হয় না শেষও হয় না। একটা চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া টাইপের ২৪ ঘন্টাই কিছু না কিছু চলে। এতো বেশি চ্যানেল আর এতো বেশি অনুষ্ঠান তার ফাঁকে এতো বেশি এড, কোন চ্যানেলে যে কখন কি হয় তা মনে রাখা তো দূরের কথা এড এর টাইমে চ্যানেল উল্টাইলে কতক্ষন পরে আউলাইয়াই ফালাই একটু আগে কোন চ্যানেলে কি দেখতেছিলাম!!
.
এখন আর আগের মত বাদবিচারহীন ভাবে একসাথে বসে টিভি দেখা হয় না। সবার চোখের সামনেই কিছু না কিছু আছে। একেক ঘরে ২-৩টা করে টিভি, কারো সামনে পিসি, কেউ ল্যাপটপ কেউ ট্যাব বা স্মার্ট ফোনে ফেসবুক বা ইউটিউব বা গেমস নিয়ে বিজি।
.
এখন আর কেউ ড্রেস কিনার জন্য ঈদের অপেক্ষায় থাকে না। মাসেই ৩-৪টা করে কিনে, একটা ড্রেস পরে কোথাও গেলে সেটা পরে আর বাহিরে যাওয়া যাবে না সবাই কি বলবে সো আবার কিনো। সারা বছরই নতুন ড্রেসের ছড়াছড়ি, তাই আর এখন ঈদের ড্রেসে আলাদা কোন আনন্দ লাগে না। কিছু মানুষ শুধু শপিং করতেই আনন্দ পায় (টাকায় তো মাইনষেরে চাবায়)
.
সব কিছু যখন বেশি বেশি তো লোডশেডিংও বা বসে থাকবে কেন। সেও এখন যায় ঘন্টায় ঘন্টায়। কিন্তু এখন আর লোডশেডিং এ কেউ উল্লাস প্রকাশ করে না। কেউ আইপিএস/ জেনারেটরের কল্যানে টেরই পায়না, আর যারা পায় তাঁরা হাসিনারে গাইল্লায়া একটু সুখ খুঁজে।
.
.
আগে সব কিছু ছিলো লিমিটেড কিন্তু আনন্দ ছিলো আনলিমিটেড। এখন সব কিছুই আনলিমিটেড কিন্তু আনন্দটা হয়ে গেছে লিমিডেট।
আসলেই লিমিটে থাকা ভালো, বেশি বেশি কোন কিছুই ভালো না।

সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

নিজের সর্বনাশ

মেয়েদের মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। প্রায় বেশিরভাগ মেয়েই বয়ফ্রেন্ড ছাড়াও লাইফে এমন একজন বন্ধুকে চায়, যার সাথে সে সবকিছু শেয়ার করতে পারবে। তার যতো ইচ্ছে, স্বপ্ন, আশা, আকাংখা, সুখ কিংবা মন খারাপের গল্প, নিজের একান্ত ব্যাক্তিগত কিছু কথা যা হয়তো সে কাউকেই বলে না। সে সব কিছু শেয়ার করে এই অতিপ্রিয় বন্ধুর সাথে। মেয়েদের কাছে এই বন্ধুত্বের মূল্য অনেক অনেক বেশী থাকে। হয়তো মেয়েটার রিলাশানের চেয়েও বেশী।
.
বয়ফ্রেন্ড এর সাথে ঝগড়া করে মন খারাপ করে এসে শান্ত্বনা খুজবে এই বন্ধুর কাছে। বাড়ীতে চেচামেচি করে একা ঘরে দরজা বন্ধ করে বালিশ ভিজিয়ে কাদবে তাতেও ফোনের ওপাশে সঙ্গী থাকা চাই সেই বন্ধুটিকে। কেউ খারাপ কিছু বলেছে, আগেই নালিশ জমা ঐ বন্ধুর কাছে। যে কোন আবদার আগে ঐ ফ্রেন্ডের কাছে যদিও সে তা পুরন করতে পারবে না জানে তাও।
.
এভাবে চলতে চলতে একসময় তাদের মধ্যে সম্পর্কটা যে কোথায় গিয়ে ঠেকছে সেদিকে মেয়েটার কোনো হুশ না থাকলেও কখনো রিলেশনে জড়াবেনা বলা ছেলেটা তার সর্বনাশ ঠিকই টের পায়। মেয়েটা তার বয়ফ্রেন্ড আছে বলে নিশ্চিন্ত মনে যখন তাদের সম্পর্কটাকে অনেকখানি গভীর করে তোলে। ছেলেটা তখন নিশ্চিতভাবেই দোটানায় পড়ে অথৈ সমুদ্রে হাবুডুবু খেতে থাকে। না পারে সামনে যেতে না পারে পিছে আসতে।
.
একজনের দৈনন্দীন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে, তার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে থাকলে তার প্রতি দুর্বলতা এমনিতেই তৈরী হয়ে যায়। একটা পর্যায়ে যখন ছেলেটার অবস্থা মেয়েটা বুঝতে পারে, তখন থেকে শুরু হয় এড়িয়ে চলা, বাড়তে থাকে জটিলতা। এক সময় না যায় সওয়া না যায় বলা করতে করতে ছেলেটা খেই হারিয়ে ফেলে। অনিচ্ছা স্বত্বেও উল্টাপাল্টা আচারন শুরু করে। ফলাফল আরো কিছু ফ্রেন্ডের সাথে সম্পর্ক নষ্ট, ছেলেটা হয়ে যায় একঘরে। সম্পর্কের টানাপোড়নে সম্পর্ক নষ্ট হয়, সূচনা হয় অসমাপ্ত গল্পের।
.
মধুর একটা সম্পর্কের শেষটা তাই হয়েও হয় না। সম্পর্কের এই জটিলতা এখন আমাদের লাইফের কমন ব্যাপার হয়ে গেছে। যেন নিত্যদিনের ডালভাত।

(কে লিখছে জানি না  )

রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

ওয়েডিং রিং

পোলাপাইনে দুই দিন পর পরি দেখি রিলেশনশীপ স্টাটাস বদলায়। কখন যে কে কার লগে কোন রিলেশনে চলে সেইটা মনে রাখাই টাফ। একবার এক ফ্রেন্ড আর তার গার্ল ফ্রেন্ডের সাথে আমরা তিন জনে কনফারেন্স কলে কথা কইতেছিলাম। আতকা কইয়া বইলাম “তুমি দেশে আসবা কবে!!” তখন আমার মনেই নাই যে এইডা তার এক্স লন্ডনী গার্লফ্রেন্ড না, এইডা নয়া চিটাইংগা গার্লফ্রেন্ড!!!! লাগ্লো নি প্যাচ!!

তো যাইহোক পোলাপাইন রিলেশন জিনিস্টারে যতটা সস্তা বানায়া ফালাইছে ব্যাপারটা আসলে আদি কাল থেকে অতটা সস্তা ছিল না। বাদ দেন এডি উচ্চমর্গীয় কথাবার্তা। এই রিলেশন ফিলেশন যারা করে হেরা এডি ভালো বুঝে আমি নাদান দর্শক খালি দেইক্ষাই যাই 

আজকে নেট থেকে পাওয়া নয়া একখান জিনিস শেয়ার করি। হাতের পাঁচটা আঙুল থাকতে ওয়েডিং রিং (বিয়ের আঙটি) কেন শুধু অনামিকাতেই পরানো হয়.. ?

চাইনীজ দের অনেকেই বিশ্বাস করে হাতের পাঁচটি আঙুল পাঁচটি সম্পর্ক কে প্রতিনিধিত্ব করে। এ বিষয়ে চমৎকার একটি মতবাদ আছে!
-
বৃদ্ধাঙ্গুলী (প্রথম আঙুল)- পিতা-মাতা
তর্জনী (দ্বিতীয় আঙুল)- ভাই-বোন
মধ্যমা (তৃতীয় আঙুল)- নিজেকে
অনামিকা (চতুর্থ আঙুল)- জীবন সঙ্গী (স্বামী/স্ত্রী)
কনিষ্ঠা (পঞ্চম আঙুল)- সন্তান

এবার আসুন ছোট্ট একটি পরীক্ষা করি
ধাপ-১: প্রথমে দুই হাতের তালু পরস্পরের মুখোমুখি রেখে দুই হাতের দশটি আঙুল এক করুন। মধ্যমা দুইটি ভাঁজ করে পিঠাপিঠি লাগান। অর অন্য চারটি আঙুলের ফিংগার টিপ পরস্পর পরস্পরকে স্পর্শ করে থাকবে।

ধাপ-২: বৃদ্ধাঙ্গুলী দুইটি পরস্পর হতে পৃথক করুন। দেখবেন পৃথক হয়ে যাবে। বাবা-মা সারাজীবন আপনার
সাথে থাকবেন না, আগে পরে উনারা আপনাকে ছেড়ে চলে যাবেন। বা সাথে থাকলেও একটা সময় আপনাকে তাদের থেকে আলাদা ভাবে কাজ করতে হবে। (বৃদ্ধাঙ্গুলী দুইটি আবার পূর্বের অবস্থায় নিয়ে আসুন)।

ধাপ-৩: এবার তর্জনী দুইটি পরস্পর হতে পৃথক করুন। পৃথক হয়ে যাবে। ভাই বোন-দেরও নিজেদের সংসার হবে, জীবনের বাস্তবাতায় তারাও একদিন আপনার থেকে পৃথক হয়ে যাবে। (তর্জনী দুইটি আবার পূর্বের অবস্থায় নিয়ে আসুন)।

ধাপ-৪: এবার কনিষ্ঠ আঙুল দুইটি পৃথক করুন, এই আঙুল দুইটিও পৃথক হয়ে যাবে। একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর আপনার সন্তানরাও বড় হবে, স্বাবলম্বী হবে... তাদেরও ঘর সংসার হবে। হয়তো তারাও আপনার থেকে পৃথক হয়ে যাবে বা যেতে হবে। (কনিষ্ঠা দুইটি আবার পূর্বের অবস্থায় আনুন)।

ধাপ-৫: এবার অনামিকা দুইটি পরস্পর থেকে পৃথক করার চেষ্টা করুন। আপনি বিস্মিত হবেন... অনামিকা দুইটি পৃথক হচ্ছেনা! আপনি আবারও চেষ্টা করে দেখতে পারেন....অনামিকা পৃথক করা সম্ভব হবেনা।
আপনার জীবনসঙ্গী আপনার সারা জীবনের সাথী.... একে অন্যেরসাথে সুখে দুঃখে সবসময় পাশাপাশি কাছাকাছি থাকবেন ঠিক অনামিকার মত....


এটা এক্সপেক্ট করেই অনামিকায় ওয়েডিং রিং পরানো হয় মগর জাতি বড়ই ফার্স্ট। বাকিরা প্রাকৃতিক নিয়মে ছেড়ে যাওয়ার আগেই জাতি তাদেরই “অনামিকার” জন্য ছেড়ে দেয়!! শেষে “অনামিকাও” সব সময় সাথে থাকে না... কখনো ফিজিক্যালি থাকে না আবার কখনো সামাজিকতা রক্ষায় চক্ষু লজ্জায় ফিজিক্যালি থাকলেও মেন্টালী সাথে থাকে না। মানে কাছে থেকেও নাই..

শুরুতেই কইছিলাম ‘রিলশন’ ব্যাপারটা আদি কাল থেকে এতো সস্তা ছিলো না যতটা আধুনিক পোলাপাইন এইডারে সস্তার চেয়েও সস্তা বানায়াফালাইছে...

বুধবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪

“প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন” এবং “বিএফ-জিএফ জেনারেশন”

এক কালে প্রেমিক-প্রেমিকারা প্রেম করতো কালের বিবর্তনে এখন বিএফ-জিএফেরা প্রেম করে। অনেকের কাছে এইটার লাউ আর কদু মনে হইতে পারে তবে এটা লাউ কদুর মত ব্যাপার না। “প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন” এবং “বিএফ-জিএফ জেনারেশন” এর মধ্যে পার্থক্যঃ
.
১. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন একে অন্যের সাথে সুখ দুঃখ ভাগাভাগি করে নিত, বিএফ-জিএফ জেনারেশন ‘কেয়াড়িং এন্ড শেয়াড়িং” করে।
.
২. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন বন্ধুদের জন্য বরাদ্ধ সময়ে ডেট করতো না। বিএফ-জিএফ জেনারেশন শুধুমাত্র দরকার না পড়লে ফ্রেন্ড কি জিনিস তা মনেই রাখে না। ডেটেই জীবন ডেটেই মরন।
.
৩. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন মাঝে মধ্যে কালেভদ্রে রিক্সায় ঘুরা আর বাদাম/ফুসকা বা হাওয়াই মিঠাই খেয়ে প্রেমালাপেই বেশি মত্ত থাকতো। 
বিএফ-জিএফ জেনারেশন মিনিমাম ফ্রাইড চিকেন উইথ সফট ড্রিংস ছাড়া ক্যান জানি প্রেম করতেই পারে না। এই জেনারেশনে যে ৬ মাস প্রেম করতে পারে তার ঢাকা শহরের নাম করা সব রেস্টুরেন্ট এর মেন্যু মুগস্থ হইয়া যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। বরং না হওয়াটাই অস্বাভাবিক।
.
৪. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশনে একজনে তেড়ি বেড়ি করলে অন্যজনে সুইসাইডের হুমকি দিত। বিএফ-জিএফ জেনারেশন এক্ষেত্রে স্ক্রিনশর্ট বা “লিটনের ফ্লাটের ভিডিও” নেটে ছেড়ে দেয়ার হুমকি দেয়।
.
৫. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন শুরু থেকেই বাপ মায়ের অবাধ্য ছিলো। প্রেমও করতো পালায়া বিয়াও করতো পালায়া। 
বিএফ-জিএফ জেনারেশন প্রেম করার সময় বাপ মায়ের অবাধ্য হলেও বিয়ার টাইমে বাপ মায়ের বাধ্যগত। “বাবা মা মানবে না” এই কথাটা বেশির ভাগ বিএফ-জিএফ এরই “সকল কাজ” সারার পরে যাইয়া মনেপড়ে। 

৬. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন সাপ্তাহে একটা করে নীল খামে এলাকার পিচ্চি ব্রাদার মারফত চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমে যোগাযোগ করতো। 
বিএফ-জিএফ জেনারেশন সারাদিনই ডিজিটাল যোগাযোগের উপরেই থাকে। কথা বলতে বলতে মাঝে মধ্যে হাপায়া গেলে বা ব্যাটারী শেষ হইলে ৫-১০ মিনিটের জন্য খ্যান্ত দেয়।
.
৭. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন এর পার্সে বা মানিব্যাগে তার লাভারের পাসপোর্ট সাইজের ছবি থাকত। বিএফ-জিএফ জেনারেশন এর স্মার্টফোনে, ল্যাপটপে, ফেসবুক প্রো পিকে তাদের হাজার হাজার কাপল সেলফি থাকে।
.
৮. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশনের মধ্যে আল্লাহয় লাজ লজ্জা বেশি দিছিলো। তাদের রিলেশনশিপ স্টাটাস কখন কেমন তা খুব কাছের ২-১ জন ফ্রেন্ডরা ছাড়া সহজে কেউ জানতো না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা ভাইজ্ঞা যাওয়ার পরে জাতি এদের রিলেশনের ব্যাপারে জানতো। 
বিএফ-জিএফ জেনারেশন এর লাজ লজ্জা ব্যাংক এ ফিক্সড ডিপজিট করা। সকালে ইন এর রিলেশন উইথ মোখলেস, দুপুরে এঙ্গেজ উইথ ছখিনা, বিকালে মেরিড উইথ জরিনা, সন্ধ্যায় ইন আ কমপ্লিকেটেড রিলেশনশীপ, রাতে সিঙ্গেল এবং মধ্য রাতে আবার ইন এ রিলেশনশীপ স্টাটাস পুরা বিশ্ব ফেসবুকের মাধ্যমে দেখতে পায়। (জনগনের বিরক্তি এরা কেয়ার না)
.
৯. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন মাঝে মধ্যে খুব ক্লোজ বন্ধুদের সাথে কিছুটা আনন্দঘন মূহুর্ত পার করার জন্য সবাই একসাথ হয়ে সুন্দর কোন জায়গায় আড্ডা দিত।
বিএফ- জিএফ জেনারেশন এখন একটু ডিফ্রেন্ট ভাবে ‘ফান’ বা ‘চিল’ করার জন্য ফেড়ন্সদের সাথে কোন A টু Z “FC” বা সিসা হাউজে হ্যাং আউট করে (যদিও এডির মানে আমি এখনো বুঝি না, খালি শুনি)
.
১০. প্রেমিক প্রেমিকা জেনারেশন একে অন্যের মাঝে “ভালোবাসা” খুঁজতো, 
বিএফ জিএফ জেনারেশন একে অন্যের জন্য “ভালো”-“বাসা” খুঁজে। ক্যান খুঁজে তা এই ইমো দিয়াই বুইজ্ঝা নেন