“বাবা আরো একটু রাইস দেই?”
<“নাহ, ভাত দাও!!”
“ঐ ভাত আর রাইসে পার্থক্য কই?”
<“পার্থক্য না থাকলে সব বাংলায় বইলা ভাত টা আবার ইংলিশে বলতে যাও ক্যান??”
“এইটা ফ্রাইড রাইস, ডাক্তার মানা করছিলো তাও তোমার জন্য আনছি ”
.
এখন আর রিসাতের হাতের সমস্যার জন্য কস্ট করে ছুরি-চামুচ দিয়ে কাটা বেছে খেতে হয় না, গরমের ভয়ে রোদ থেকে পালিয়ে থাকতে হয় না। এখন প্রতিদিনি কেউ না কেউ তাকে খাইয়ে দেয়, এসি রুমে বসে জানালা দিয়ে বাহিরের মিস্টি রোদ পোহায়। আসলে ঢাকা শহরের রোদ তো আর মিস্টি না, কিন্তু ১৪ তলা উপরে এসি রুমের জানালার গ্লাস দিয়ে ঢুকা রোদের আলোর সাথে এসির হাওয়া মিশে “মিস্টি রোদই” মনেহয়।
.
রিসাত প্রথম যেদিন হসপিটালে আসে তার কাছে জায়গাটা অসস্তিকর লেগেছিল। আসলে হসপিটাল জায়গাটাই তার পছন্দ না। ছোট বেলায় তাকে হসপিটালে রুগী দেখতে না নেয়ার জন্য কে জানি বলেছিলো “মানুষ মারা যাবার আগে হসপিটালে যেয়ে ওয়েট করে!!” কয় দিন পর সত্যি সেই রুগী মারা যায়!! এর পর থেকেই হসপিটালের প্রতি তার চরম অনাগ্রহ।
.
কিন্তু এখানে কয়দিনেই রিসাতের কাছে জায়গাটা পরম আপন হয়ে গেছে। এখন আর তার শারিরীক সমস্যা নিয়ে খুব বেশি ভুগতে হয় না, কোথাও গিয়ে কারো সামনে অসস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। তাকে এখানে সাহায্য করার জন্য মানুষের অভাব নেই। ডাক্তারো একেবারে মনের মত, তার মত ফেসবুক এডিক্টেড!! ডাক্তার ভিজিটে না থাকলে প্রায় সময় ফেসবুকেই ডাক্তারের সাথে চ্যাট হয় রিসাতের! ফেসবুকেই তার এখন সময় কাটে।
.
এখনকার হসপিটালগুলো অনেকটা হোটেলের মত। প্রতি রুমে টিভি-ফ্রিজ-এসি- ওয়াইফাই-ডিসের লাইন। পাশের রুমের রুগীর এক আত্মিয়ের চিৎকার শুনা যাচ্ছে “আবে হালার কি হছপিটালে আইছি, ঢিছের লাইন ভি হালায় কাম করে না। এত টাহা দিয়া কেবিন ভাড়া করছি কি হালার বিটিভি দেখবার লিগা নি!!?”
.
প্রাইভেট হসপিটালে দুই ধরনের মানুষ আসে। এক দল আসে আসলেই চিকিৎসা করাতে আর আরেক দল চিকিৎসার চেয়ে শো অফ টাই বেশি করে। রিসাতের হোম পেইজে ওই দিন মৌ এর ছবি দেখলো এক লাক্সারিয়াস হস্পিটালে প্লাস্টারয়ালা পা নিয়ে হাসি মুখে সেলফি আপলোড করছে ক্যাপশনে লেখা “Frndzzzz pry 4 me, a’m sick” কিন্তু ওর চেহারায় মনেহয় ও হসপিটালে না, হানিমুনে আছে শুধু ভাঙ্গা পা টা বাদ দিলে!!
.
হসপিটালের আরো একটা ব্যাপার, এখানকার রিসিপসনিস্ট আর ইন্টার্ন ডাক্তারেরা চরম সুন্দরী হয়। শুধু পার্থক্য হলো রিসিপশনিস্টের চেহারায় সব সময় চরম বিরক্ত একটা লুক থাকে আর ডাক্তারদের চেহারায়া একটা মায়াময় ভূবন ভূলানো হাসি থাকে। সেই হাসিতে রুগী ভূলেই যায় যে সে মৃত্যুপথযাত্রী!!! কিন্তু মাঝে মধ্যে সেই ভূবন ভূলানো হাসির মাঝে একটা “হিডেন” মলিন হাসি থাকে। মলিন হাসিতেই বুঝা যায় দুই দিনের দুনিয়ায় দ্বিতীয় দিনো শেষের পথে।
.
বিকেলে পাশের কেবিন থেকে কান্নার আওয়াজ। ডিসের লাইন না পাওয়া সেই ব্যাক্তির পেশেন্ট একটু আগে মারা গেলো। ডিসের লাইন না পেলেও যমদূতের লাইন ঠিকি পেয়েছে তারা। ডিসের লাইনের মত এখানে যমদূতও আসা যাওয়া করে। প্রতিদিনি এখানে কেউ না কেউ মারা যায়। প্রথম প্রথম ভয় লাগতো রিসাতের এখন আর লাগে না, সবাইকেই তো একদিন যমদুতের কাছে ধরা দিতেই হবে সুতারাং ভয় পেয়ে লাভ কি?
.
মৃত্যুর পরে অন্ধকার জগত। সেখানে সূর্য্য নেই। সুর্য্য যখন নেই তখন চাঁদও নেই কারন চাঁদের নিজের কোন আলো নেই। চাঁদ সূর্য্যের মিস্টি আলো যা উপভোগ করার এইখানেই করে যেতে হবে, পরো জগতে কিযে কপালে আছে আল্লাই ভালো জানে।
.
ঢাকার হাইরাইজড বিল্ডিংগুলোর কারনে কারো বাসাতেই আলো ঢুকে না। রিসাতের অনেক দিনের ইচ্ছা জীবনের শেষ সময় গুলো এমন জায়গায় কাটানোর যেখানে সূর্য্যের মিস্টি আলোয় তার ঘুম ভাংবে রাতে সে জায়গায় চাদের আলোয় ঘুমাবে। দুটো সুন্দর জিনিসের স্পর্শে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার মাঝে আনন্দ আছে...
.
.
১৪ তলা উপরের এই কেবিনে রিসাতের মন মত দুটো ব্যাবস্থাই আছে। এখন শুধু এক জনের অপেক্ষা.........
যার সাথে কেউই কানেক্ট হতে চায় না কিন্তু সময় মত ডায়াল ছাড়াই কিভাবে যেনো অটো কানেক্ট হয়ে যায়...... এতো মানুষের অনিচ্ছা স্বত্বেও যমদূত মানুষের সাথে কানেক্ট হয়। যমদূতো কি নকিয়া ইউজ করে নাকি কে জানে। হাজার হলেও “ NOKIA, Connecting people”
<“নাহ, ভাত দাও!!”
“ঐ ভাত আর রাইসে পার্থক্য কই?”
<“পার্থক্য না থাকলে সব বাংলায় বইলা ভাত টা আবার ইংলিশে বলতে যাও ক্যান??”
“এইটা ফ্রাইড রাইস, ডাক্তার মানা করছিলো তাও তোমার জন্য আনছি ”
.
এখন আর রিসাতের হাতের সমস্যার জন্য কস্ট করে ছুরি-চামুচ দিয়ে কাটা বেছে খেতে হয় না, গরমের ভয়ে রোদ থেকে পালিয়ে থাকতে হয় না। এখন প্রতিদিনি কেউ না কেউ তাকে খাইয়ে দেয়, এসি রুমে বসে জানালা দিয়ে বাহিরের মিস্টি রোদ পোহায়। আসলে ঢাকা শহরের রোদ তো আর মিস্টি না, কিন্তু ১৪ তলা উপরে এসি রুমের জানালার গ্লাস দিয়ে ঢুকা রোদের আলোর সাথে এসির হাওয়া মিশে “মিস্টি রোদই” মনেহয়।
.
রিসাত প্রথম যেদিন হসপিটালে আসে তার কাছে জায়গাটা অসস্তিকর লেগেছিল। আসলে হসপিটাল জায়গাটাই তার পছন্দ না। ছোট বেলায় তাকে হসপিটালে রুগী দেখতে না নেয়ার জন্য কে জানি বলেছিলো “মানুষ মারা যাবার আগে হসপিটালে যেয়ে ওয়েট করে!!” কয় দিন পর সত্যি সেই রুগী মারা যায়!! এর পর থেকেই হসপিটালের প্রতি তার চরম অনাগ্রহ।
.
কিন্তু এখানে কয়দিনেই রিসাতের কাছে জায়গাটা পরম আপন হয়ে গেছে। এখন আর তার শারিরীক সমস্যা নিয়ে খুব বেশি ভুগতে হয় না, কোথাও গিয়ে কারো সামনে অসস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না। তাকে এখানে সাহায্য করার জন্য মানুষের অভাব নেই। ডাক্তারো একেবারে মনের মত, তার মত ফেসবুক এডিক্টেড!! ডাক্তার ভিজিটে না থাকলে প্রায় সময় ফেসবুকেই ডাক্তারের সাথে চ্যাট হয় রিসাতের! ফেসবুকেই তার এখন সময় কাটে।
.
এখনকার হসপিটালগুলো অনেকটা হোটেলের মত। প্রতি রুমে টিভি-ফ্রিজ-এসি- ওয়াইফাই-ডিসের লাইন। পাশের রুমের রুগীর এক আত্মিয়ের চিৎকার শুনা যাচ্ছে “আবে হালার কি হছপিটালে আইছি, ঢিছের লাইন ভি হালায় কাম করে না। এত টাহা দিয়া কেবিন ভাড়া করছি কি হালার বিটিভি দেখবার লিগা নি!!?”
.
প্রাইভেট হসপিটালে দুই ধরনের মানুষ আসে। এক দল আসে আসলেই চিকিৎসা করাতে আর আরেক দল চিকিৎসার চেয়ে শো অফ টাই বেশি করে। রিসাতের হোম পেইজে ওই দিন মৌ এর ছবি দেখলো এক লাক্সারিয়াস হস্পিটালে প্লাস্টারয়ালা পা নিয়ে হাসি মুখে সেলফি আপলোড করছে ক্যাপশনে লেখা “Frndzzzz pry 4 me, a’m sick” কিন্তু ওর চেহারায় মনেহয় ও হসপিটালে না, হানিমুনে আছে শুধু ভাঙ্গা পা টা বাদ দিলে!!
.
হসপিটালের আরো একটা ব্যাপার, এখানকার রিসিপসনিস্ট আর ইন্টার্ন ডাক্তারেরা চরম সুন্দরী হয়। শুধু পার্থক্য হলো রিসিপশনিস্টের চেহারায় সব সময় চরম বিরক্ত একটা লুক থাকে আর ডাক্তারদের চেহারায়া একটা মায়াময় ভূবন ভূলানো হাসি থাকে। সেই হাসিতে রুগী ভূলেই যায় যে সে মৃত্যুপথযাত্রী!!! কিন্তু মাঝে মধ্যে সেই ভূবন ভূলানো হাসির মাঝে একটা “হিডেন” মলিন হাসি থাকে। মলিন হাসিতেই বুঝা যায় দুই দিনের দুনিয়ায় দ্বিতীয় দিনো শেষের পথে।
.
বিকেলে পাশের কেবিন থেকে কান্নার আওয়াজ। ডিসের লাইন না পাওয়া সেই ব্যাক্তির পেশেন্ট একটু আগে মারা গেলো। ডিসের লাইন না পেলেও যমদূতের লাইন ঠিকি পেয়েছে তারা। ডিসের লাইনের মত এখানে যমদূতও আসা যাওয়া করে। প্রতিদিনি এখানে কেউ না কেউ মারা যায়। প্রথম প্রথম ভয় লাগতো রিসাতের এখন আর লাগে না, সবাইকেই তো একদিন যমদুতের কাছে ধরা দিতেই হবে সুতারাং ভয় পেয়ে লাভ কি?
.
মৃত্যুর পরে অন্ধকার জগত। সেখানে সূর্য্য নেই। সুর্য্য যখন নেই তখন চাঁদও নেই কারন চাঁদের নিজের কোন আলো নেই। চাঁদ সূর্য্যের মিস্টি আলো যা উপভোগ করার এইখানেই করে যেতে হবে, পরো জগতে কিযে কপালে আছে আল্লাই ভালো জানে।
.
ঢাকার হাইরাইজড বিল্ডিংগুলোর কারনে কারো বাসাতেই আলো ঢুকে না। রিসাতের অনেক দিনের ইচ্ছা জীবনের শেষ সময় গুলো এমন জায়গায় কাটানোর যেখানে সূর্য্যের মিস্টি আলোয় তার ঘুম ভাংবে রাতে সে জায়গায় চাদের আলোয় ঘুমাবে। দুটো সুন্দর জিনিসের স্পর্শে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার মাঝে আনন্দ আছে...
.
.
১৪ তলা উপরের এই কেবিনে রিসাতের মন মত দুটো ব্যাবস্থাই আছে। এখন শুধু এক জনের অপেক্ষা.........
যার সাথে কেউই কানেক্ট হতে চায় না কিন্তু সময় মত ডায়াল ছাড়াই কিভাবে যেনো অটো কানেক্ট হয়ে যায়...... এতো মানুষের অনিচ্ছা স্বত্বেও যমদূত মানুষের সাথে কানেক্ট হয়। যমদূতো কি নকিয়া ইউজ করে নাকি কে জানে। হাজার হলেও “ NOKIA, Connecting people”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন